ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে বৈঠক করতে তেহরানে বিরল এক সফরে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে গত ফেব্রুয়ারিতে আগ্রাসন শুরুর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিদেশ সফরে মঙ্গলবার তেহরানে পৌঁছেছেন তিনি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও তেহরান সফর করছেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, পুতিন এবং এরদোয়ানের এই সফরের আনুষ্ঠানিক উদ্দেশ্য সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করা। তবে ইউক্রেনের খাদ্য শস্যের সংকট নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সিরিয়া যুদ্ধের অবসানে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে আস্তানা প্ল্যাটফর্মের আওতায় এই তিন দেশ ২০১৭ সাল থেকে বৈঠক করে আসছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, এই সফরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এবং তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পুতিন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সাবেক কেবল সোভিয়েতভুক্ত দেশগুলোতে নিজের সফর সীমিত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ওই যুদ্ধ শুরুর পর গত জুনে প্রথম আন্তর্জাতিক সফরে তাজিকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান যান পুতিন। সাবেক সোভিয়েতভুক্ত এই দেশ দুটিতে বর্তমানে কর্তৃত্ববাদী এবং রুশ মিত্ররা ক্ষমতায় রয়েছেন।
বিবিসি বলছে, মঙ্গলবারের এই সফর পুতিনকে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার সুযোগ তৈরি করে দেবে। মস্কোর আন্তর্জাতিক যে অল্প কয়েকটি মিত্র এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা দেশ রয়েছে তাদের অন্যতম ইরান।
গত সপ্তাহে মার্কিন কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে শত শত ড্রোন সরবরাহের পরিকল্পনা করছে তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগের পর তেহরান সফর করছেন পুতিন।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুতিনের শীর্ষ পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেছেন, ‘খামেনির সাথে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের মধ্যে বিশ্বস্ত সংলাপের পথ তৈরি হয়েছে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে চলে আসা সিরীয় গৃহযুদ্ধে বিরোধী পক্ষকে সমর্থন দিয়ে আসছে তুরস্ক এবং রাশিয়া। গত কয়েক মাস ধরে দেশটিতে সহিংসতা কমানোর উপায় খুঁজছে তারা। কিন্তু উত্তর সিরিয়ায় মার্কিন সমর্থিত কুর্দিদের বিরুদ্ধে যখন নতুন করে আক্রমণ চালানোর হুমকি দিয়েছে তুরস্ক, ঠিক তখনই তাদের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে তুরস্কের অভিযানের বিরোধিতা করছে ইরান ও রাশিয়া।